খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ পৌষ, ১৪৩১ | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জুলাই গণহত্যার সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয় তদন্ত সংস্থায় পলকের স্বীকারোক্তি : চিফ প্রসিকিউটর
  কক্সবাজারের পেকুয়ায় ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৫

খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতের বেঁচে থাকার আকুতি

একরামুল হোসেন লিপু

খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী হুমাইরা সিদ্দিকা জান্নাত। দুরারোগ্য কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী আছেন। জান্নাতের দুইটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে তার কিডনির আকার ছোট হয়ে আসছে। রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ ফিল্টার করার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে সাহায্যকারী রক্তের ক্রিয়েটিনিনও দ্রুততার সাথে বাড়ছে। এমতাবস্থায় চিকিৎসকদের পরামর্শ জান্নাতকে বাঁচাতে হলে দ্রুতই তার কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজন ১২ লাখ টাকা। দরিদ্র বাবা-মার পক্ষে ১২ লাখ টাকা জোগাড় করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। এ জন্য মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাত তার জীবন বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের কাজে সাহায্যের আবেদন করেছেন।

জান্নাতের আকুতি সমাজে এত বিত্তবান থাকতে আমার জীবন প্রদীপ কি নিভে যাবে?

হুমাইরা সিদ্দিকা জান্নাত খুলনা গেজেটকে বলেন, “তিন মাস আগে হঠাৎ করে আমার খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সব সময় বমি বমি ভাব লাগতো। ক্রমান্বয়ে ওজন কমতে থাকে। শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। হঠাৎ করে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। তাদের পরামর্শে খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে কিডনি এবং রক্ত পরীক্ষা করার পর দেখা যায় আমার দুইটা কিডনিই স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ছোট হয়ে গেছে। একটি ৬ সেন্টিমিটা, অন্যটি সাড়ে ৫ সেন্টিমিটার। রক্তের ক্রিয়েটিনিনও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এরপর ঢাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর শ্যামলী কিডনি হাসপাতালের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। তারা যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখে আমাকে সময় ক্ষেপণ না করে খুব দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, একটা কিডনি ক্রয় করতে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার প্রয়োজন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আমার দরিদ্র মার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। অবশেষে আমার বাবা একটি কিডনি দিতে রাজি হন। কিন্তু শ্যামলী কিডনি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ১২ লাখ টাকা খরচ হবে।

জান্নাত বলেন, আট বছর আগে আমার বাবা মো. হযরত আলী আমার মা রাজিয়া বেগমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আমাদের ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। পেশায় আমার বাবা ছিলেন একজন শ্রমিক। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আমার মা শিরোমণি বাজারে একজন চিকিৎসকের চেম্বারে সামান্য বেতনে চাকরি করে যা পেতেন তাই দিয়ে কোন মতে সংসার চালাতেন এবং আমাদের দুই ভাই বোনের পড়াশুনার খরচ যোগাতেন। কিন্তু গত তিন মাস যাবৎ আমার অসুস্থতার কারণে মা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। একদিকে সংসারে অনটন, অন্যদিকে আমার চিকিৎসার খরচ জোগাতে মা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

বর্তমান আমি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডে কেয়ার হিসেবে এডমিশনে বাড়িতে আছি। প্রতি সপ্তাহে দু’বার কিডনি ডাইলোসিস করতে ৭ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা আর ধার দেনা করে মা কোন মতে চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছেন। বান্ধবীদের মাধ্যমে আমার কলেজে সাহায্যের আবেদন করেছিলাম। কলেজের কোন ফান্ড না থাকায় শিক্ষক এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে দিয়েছে। বর্তমানে আমার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারি না। হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে যায়।

জান্নাতের আকুতি, সমাজে এত বিত্তবান থাকতে অর্থের অভাবে কি আমার জীবন প্রদীপ নিভে যাবে? তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে তার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা কামনা করেছেন”। জান্নাতের বাড়ি খানজাহান আলী থানার শিরোমনি পশ্চিমপাড়া ফকির বাড়ি।

সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা হুমাইরা সিদ্দিকা জান্নাত। বিকাশ নাম্বার 01716013828




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!